মুসা কালিমুল্লাহ—অনন্য এক স্বপ্নবাজের নাম,অসাধারণ ব্যক্তিত্বে গড়া এক মহান পুরুষ।
একজন চিত্রশিল্পী হলেও তিনি কেবল ক্যানভাসেই সীমাবদ্ধ নন। নিজের প্রতিভা ও দক্ষতাকে সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে গড়ে তুলছেন এক স্বপ্নের কর্মযজ্ঞ। তাঁর কাজ শুধু রঙে-তুলিতে নয়, বরং শিশুদের মনে স্বপ্ন বুনে, তাদের চোখে আঁকেন এক নতুন সম্ভাবনার ছবি। তিনি বিশ্বাস করেন—প্রতিটি শিশু নিজের মতো করে সুন্দর কিছু কল্পনা করে, দেখে এক নতুন জগত। আর সেই কল্পনাগুলোকেই বাস্তবে রূপ দিতে শেখান তিনি।
শিশুদের চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে মুসা তাদের ভাবনার দুয়ার খুলে দেন। প্রতিটি আঁচড়ে, প্রতিটি রঙে তিনি শিশুদের বলে দেন—”তোমরাও পারো, স্বপ্ন দেখতে এবং তা বাস্তবেও আনতে ।” তাঁর শিক্ষাদান শুধুই শিল্পচর্চা নয়, বরং একটি ইতিবাচক জীবনের চর্চাও। মুসার এই প্রচেষ্টা শিশুদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরি করে এবং তাদের ভাবনায় যুক্ত করে দেশপ্রেম।
শুধু শিল্প নয়, মুসা জড়িয়ে আছেন আরো একটি অসাধারণ উদ্যোগে। তিনি মাটি, সিমেন্ট ও পরিত্যক্ত বস্তু ব্যবহার করে তৈরি করছেন নান্দনিক স্থাপনা ও শিল্পকর্ম। এসব কর্ম শুধু চোখের প্রশান্তিই নয়, বরং সমাজকে পরিচ্ছন্ন ও সচেতন রাখার এক প্রাণবন্ত আহ্বান। তার তৈরি মূর্তি, দেয়ালচিত্র, বাগানের সাজসজ্জা কিংবা পথের ধারে নির্মিত ভাস্কর্য—সবই পরিবেশবান্ধব ও বার্তাবাহী। এসবের মাধ্যমে তিনি পরিচ্ছন্নতা, সৃজনশীলতা ও জনসচেতনতাকে একসাথে মিশিয়ে সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
মুসা কালিমুল্লাহ’র অন্যতম লক্ষ্য—জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে পরিচ্ছন্ন দেশ গড়া। তিনি মনে করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে একটি সুন্দর, পরিপাটি, সুস্থ দেশ গড়ে তুলতে। এজন্য তিনি বিভিন্ন স্থানে কর্মশালা আয়োজন করেন, যেখানে শিশুসহ বড়রাও অংশ নেয়। তার এই উদ্যোগে ইতোমধ্যে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন, অনেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন।
একজন শিল্পীর হাত যখন সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে ওঠে, তখন তা শুধু সৌন্দর্যের নয়, দায়িত্ববোধ ও সামাজিক জাগরণের প্রতীক হয়। মুসা কালিমুল্লাহ ঠিক সেই কাজটিই করছেন—শিশুদের স্বপ্ন দেখিয়ে, শিল্পের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতার বার্তা ছড়িয়ে, এবং মানুষকে ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা দিয়ে।
এই সময়ের তরুণ প্রজন্মের জন্য তিনি হতে পারেন এক অনন্য অনুকরণীয় চরিত্র। তাঁর প্রচেষ্টা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, একটি স্বপ্নের দেশ গড়তে শুধু সরকার নয়, প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা, সৃজনশীল উদ্যোগ এবং সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এমন একজন সাহসী পথপ্রদর্শক—যেমন মুসা কালিমুল্লাহ।